বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ৩০ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা ও শ্রমআইন বাস্তবায়নেরর দাবি
অবিলম্বে সরকারের মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে ৩০ হাজার টাকা নিম্নতম মজুরি ঘোষণা এবং নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র, ৮ ঘণ্টা কাজ ও সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকরসহ শ্রমআইনের বিধি-বিধান বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহরের চৌমুহনাস্থ কার্যালয়ে জমায়েত হয়ে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে কোর্ট রোড, চৌমুহনা, সেন্ট্রাল রোড ঘুরে পুণরায় দলীয় কার্যালয়ে এসে সমাপ্ত হয়। পরে দলীয় জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এক শ্রমিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ সুহেল মিয়া, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া, চৌমুহনা আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক বিজয় দেবনাথ প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন বর্তমান দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্দ্ধগতিতে দেশের নিম্নতম আয়ের জনগণের মতো হোটেল-রেস্টুরেন্টে কর্মরত শ্রমিকরাও নিদারুন কষ্টের সাথে দিনাতিপাত করছেন। চাল, ডাল, আলু, তেল, পিয়াজসহ নিত্যপণ্যের মূল্য প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সরকারের হিসেবেই গত নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৪ শতাংশে দাড়িয়েছে, যদিও প্রকৃত মূল্যস্ফীতি আরও বেশি। অথচ শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। এমনকি শ্রমআইন অনুযায়ী ৫ বছর অন্তর নিম্নতম মজুরি ঘোষণার বাধ্যবাধকতার বিধান থাকলেও হোটেল সেক্টরে প্রায় ৮ বছর পর ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়। ৬ মাসের মধ্যে মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে নিম্মতম মজুরি হারের সুপারিশ প্রণয়নের আইনও থাকলেও বর্তমান মজুরি বোর্ড ইতোমধ্যে প্রায় ১২ মাস অতিক্রান্ত করেছে। এভাবে সময়ক্ষেপন করে আরও একটি মজুরি বোর্ডের মেয়াদকাল অতিক্রান্ত করে শ্রমিকদের ঠকানোর অপকৌশল চলছে।
বক্তারা অনতিবিলম্বে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে ৬ সদস্যের পরিবারের ভরনপোষণের খরচ হিসেব করে হোটেল-রেস্টুরেন্টে কর্মরক শ্রমিকদের জন্য ৩০ হাজার টাকা নিম্নতম মজুরি ঘোষণা এবং বার্ষিক ১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রদানের জোর দাবি জানান। এছাড়াও সভা থেকে বাংলাদেশ শ্রমআইন-২০০৬ এর ৫ ধারা অনুযায়ী সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র প্রদান, ১০৩ ধারা অনুযায়ী সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিককে সাপ্তাহিক দেড় দিন ছুটি প্রদান, ১০০ ধারা অনুযায়ী সকল হোটেল-রেস্টুরেন্টে দৈনিক ৮ ঘন্টা কর্মদিবস এবং ১০৮ ধারা অনুযায়ী অতিরিক্ত কাজে দ্বিগুণ মজুরি প্রদান, (২ক) ধারা অনুযায়ী সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিককে প্রতিবছর দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবে উৎসব ভাতা প্রদান এবং ১১৮ ধারা অনুযায়ী বছরে ১১ দিন উৎসব ছুটি প্রদান, ১১৫ ধারা অনুযায়ী সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিককে বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি, ১১৬ ধারা অনুয়াযী ১৪ দিন অসুস্থ্যতা ছুটি এবং ১১৭ ধারা অনুযায়ী প্রতি ১৮ দিন কাজে ১ দিন বার্ষিক ছুটি প্রদানের দাবি জানানো হয়।